শহর জুড়ে সক্রিয় সোনা জালিয়াতি চক্র, দমদমে ধৃত ২

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা : টানা লকডাউনের ফলে আর্থিক দিক দিয়ে জনজীবন প্রায় বিধস্ত। সম্বলহীন সাধারণ মানুষ,অভাবের তাড়নায় বাধ্য হচ্ছেন নিজের জমানো পুঁজি ভাঙতে কিংবা নিজস্ব স্বর্ণ অলংকার বন্ধক বা বিক্রি করতে। সেই কারণেই কলকাতার গোল্ড লোনপ্রদানকারী সংস্থাগুলিতে রোজ উপচে পড়ছে সাধারণ মানুষের ভিড়। এই সোনা বিক্রির সূযোগ নিয়ে কিছুদিন ধরেই আবার কলকাতা শহর জুড়ে শুরু হয়েছে সোনা জালিয়াতি। বৃহস্পতিবার সকালে দমদম নাগেরবাজারের একটি বহুশাখাবিপনি জুয়েলার্সে এক অল্পবয়সী অবাঙালি যুবতী একটি সোনার গলার চেন বিক্রি করতে আসেন। দোকানের কর্মী প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার পর সোনার চেনটি আসল বলে মনে করলেও, সঙ্গে সঙ্গে মেশিনে পরীক্ষার পর দেখা যায় সেটি সম্পূর্ণ নকল। সন্দেহ হওয়াতে, ওই মহিলাকে কাউন্টারের বাইরে বসিয়ে রেখে, দোকানের এক কর্মী খবর দেন স্থানীয় কামারডাঁঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তমাল দাসকে। প্রসঙ্গত, এর আগেও একবার এই একই রকমভাবে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল ওই অঞ্চলে,সে কথা মনে রেখেই, ওই দোকানের কর্মী বিন্দুমাত্র দেরি না করে পুলিশকে খবর দেন। দোকানকর্মীর ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কামারডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তমাল দাস। পুলিশ দেখে পালানোর চেস্টা করলেও, তাঁকে ধরে ফেলে পুলিশ। “এই সব জালিয়াতির কাজে জালিয়াত কখনও একা আসেনা”- এটা ভেবেই সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে তমালবাবু দোকানের আশপাশের এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে ধরে ফেলেন সন্দেহজনক আরও ১ যুবককে । ধৃতদের থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ । মূল অপরাধী উত্তরপ্রদেশের আজমগরের বাসিন্দা রেশমা শেখ(২৫), অপর জন জগদ্দল এবং উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা শ্রাদান চৌরাসিয়া(২৪)। ধৃতদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা ,এদের পেছনে রয়েছে বড় ধরনের কোনো জালিয়াতি চক্র এবং পুজোর মুখে তারা সমগ্র শহর জুড়েই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই কামারডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তমাল দাস ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে, রাজ্যের ও আন্তঃরাজ্যে অবস্থিত এই গ্যাংটির সবকটি গোপন ডেরাতে হানা দিয়ে ধরার চেস্টা চালাচ্ছেন । তদন্ত করে সবদিক খতিয়ে দেখে, দ্রুত পুরো জালিয়াত দলটিকেই গ্রেফতার করার জন্যে আপ্রান চেস্টা চালাচ্ছেন কামারডাঙ্গা থানার আধিকারিক তমাল দাস।
আরও পড়ুন: মাদক সহ গ্রেফতার ১
তাদের থানা এলাকায় এই ধরনের জালিয়াতি এড়ানোর জন্যে তিনি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিয়ে বলেছেন যে, এই মহামারীর প্রতিকুল সময়ে বিপদাপন্ন সাধারণ মানুষের থেকে সোনা ক্রয় করার সময়,যেন বিক্রেতার উপযুক্ত পরিচয়পত্র এবং সোনা সঠিকভাবে পরীক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখা হয় দোকানদারদের তরফ থেকে।