প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা। ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন আদালত

রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা। ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন বারাসত আদালত।এরা হলেন টুকাই বিশ্বাস, নাদু ঘোষ, প্রবীর মণ্ডল, কালিদাস অধিকারী এবং বাপি রহমান। বাকি তিন জন আপাতত বেকসুর খালাস. এই মুহূর্তে তারা ছাড়া পেলেও, আরও তথ্যপ্রমাণ-সহ ওই বাকি তিনজনের বিরুদ্ধেও আদালতে নতুন করে আবেদন করা হবে।
চার্জশিট জমা পড়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই। তদন্তও শেষ হয়েছিল দ্রুত। এবার শেষ হল বিচার প্রক্রিয়া। বাগুইআটি থানা এলাকার জগৎপুরের কাছে সঞ্জয় রায় ওরফে বুড়োকে খুনের ঘটনায় ৯ জুলাই, গত বৃহস্পতিবার, ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন বারাসত আদালত। প্রসঙ্গত,
২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ওই দিন সকাল ১০টা নাগাদ বাগুইআটি থানার জগৎপুরের কাছে বাইক আরোহী প্রহ্লাদ মজুমদার, তাঁর সঙ্গী অনিকেত এবং সঞ্জয় রায় ওরফে বুড়োর উপরে বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। প্রহ্লাদ এবং অনিকেত কোনওভাবে পালিয়ে যান। কিন্তু সঞ্জয় রায়কে সামনে থেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলিতে আহত সঞ্জয় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। সঞ্জয় রায়কে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রহ্লাদ মজুমদারের বয়ানের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে প্রত্যেককেই গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত চলাকালীন দু’জনের বাড়ি থেকে তিনটি পাইপগান এবং বেশ কিছু গোলা-বারুদ উদ্ধার করে তদন্তকারী দল। একজনের বাড়ির লাগোয়া এলাকা থেকে পাওয়া যায় বোমার মশলা। তদন্তে জানা যায়, সঞ্জয় রায়কে খুন করতে একটি বড় আকারের স্ক্রু-ড্রাইভারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। একজন দুষ্কৃতীর কাছ থেকে সেই স্ক্রু-ড্রাইভার উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সঞ্জয় রায়ের শরীরে পাওয়া বুলেট এবং অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বুলেটের মধ্যে সাদৃশ্য প্রমাণিত হয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরির রিপোর্টে। তদন্ত চলাকালীন আর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে উঠে আসে, আর এক দুষ্কৃতী তাকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিল সঞ্জয় রায়কে খুনের জন্য। টাকার বিনিময়েই সঞ্জয়কে খুন করতে সে দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করেছিল। তার কাছ থেকে ঘটনাস্থলের একটি নকশাও উদ্ধার করেছিলেন অফিসারেরা। সেই নকশায় যে সই ছিল, তা যে গ্রেফতার হওয়া এক অভিযুক্তের, সেটা নিশ্চিত করে আমাদের ‘কোয়েশ্চেনড ডকুমেন্ট একজামিনেশন ব্যুরো’ (QDEB)। গ্রেফতার করা হয় খুনের বরাত দেওয়া সেই দুষ্কৃতীকেও। টিআই প্যারেডে চিহ্নিত হয় আরেক অভিযুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ষড়যন্ত্র, অস্ত্র আইন-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়। এই মামলায় মোট ৩৪ জন সাক্ষী দেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী-সহ মোট ৮ জন আদালতে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন।